মোঃ আল আমিন, মাধবদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা ঃ
ঝোপঝাড়ের ভেতরে আম গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তাইজুল ইসলাম(২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে মাধবদী থানা পুলিশ। “হত্যা না আত্নহত্যা” এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃস্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর সোয়া দুইটায় নরসিংদীর মাধবদী থানার নূরালাপুর ইউনিয়নের ছোট রামচন্দ্রদী এলাকার মৃত শাহজাহানের পুকুর পাড়ের আম গাছে। নিহত তাইজুল ইসলাম ছোট রামচন্দ্রদী এলাকার মৃত হাবিবুল্লাহ’র ছেলে। নিহতের বড় ভাই ফাইজুল ইসলামের অভিযোগ “এটা কোন আত্নহত্যা নয় পরিকল্পতি হত্যাকান্ড”। এসময় ফাইজুল বলেন, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে আমার ভাই একই এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাঈদ ও অপরিচিত একজনের সাথে মোটর সাইকেলে ঘুরতে যায়। রাত পৌনে আটটার দিকে তার উকিল শ্বশুর সামসুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হয়। এরপর থেকে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা সারারাত বিভিন্ন স্থানে খোঁজা খুজি করে না পেয়ে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে দশ টার দিকে মাধবদী থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে খবর পাই তার লাশ পাশ্ববর্তী পুকুর পাড়ের গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তৎক্ষনাত আমরা দৌড়ে এসে দেখি আমার ভাইয়ের লাশ পুকুর পাড় আম গাছের সাথে মাটিতে হাঁটু গাড়া অবস্থায় ঝুলে রয়েছে। পরে মাধবদী থানায় পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল এসে লাশ উদ্ধার করে। যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তার ভাইয়ের ময়না তদন্তের রিপোর্ট যেন সঠিক ভাবে করা হয় এ ব্যাপারে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে নিহত তাইজুল ইসলামের উকিল শ্বশুর সামসুল ইসলাম জানান, আমি ও নিহতের বড় ভাই গতকাল ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাত পৌনে আটটায় তাইজুল ইসলাম আমাকে ফোন করে। ফোন করে বলে আমি যদি মরে যাই তাহলে আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। আর আমার মরার পর আমার লাশের সুন্দর করে গোসল দিয়ে জানাজা দিয়েন। তখন আমি তাকে বললাম তোমার কি হয়েছে? তোমার ভাইয়ের সাথে কথা বলো এই বলে তার বড় ভাইকে ফোন দিতেই সে ফোনের লাইন কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে তার সাথে আর কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হযনি। তারা পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সে অত্যন্ত নম্র, ভদ্র ও শান্তশিষ্ট স্বভাবের ছিলো। এলাকায় তার কোন শত্রু ছিল না বলেও তিনি জানান। এ ব্যাপারে মাধবদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ এমদাদুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করি। নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্টে শরীরে কোন ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি তাই এটি হত্যা না আত্মহত্যা বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। নিহত তাইজুল ইসলামের মৃত্যুর রহস্য ঘিরে এলাকায় চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা।
Leave a Reply