আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সড়ক দুর্ঘটনায় বিয়ের তিন সপ্তাহের মাথায় বিধবা নববধূ 

ফাতেমা শবনম: বিয়ে হয়েছে মাত্র ২২ দিন হলো, এরই মাঝে সড়ক দুর্ঘটনায় হারালেন স্বামীকে। নববিবাহিত এই তরুণী স্বামীকে হারিয়ে এখন বাকরুদ্ধ। ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের আহম্মদাবাদের বাড়িতে এখন শোকের ছায়া।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর চায়না মোড় এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে তিনজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় একই পরিবারের তিন ভাইয়ের তিন ছেলে নিহত হন। তাঁদের মধ্যে একজন বিয়ে করেছিলেন মাত্র ২২ দিন আগে।

নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, রাফ রাফ এন্টারপ্রাইজের ড্রামট্রাকটি মোটরসাইকেলকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। তখন মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেকটি গাড়ির সামনে গিয়ে পড়লে সেটি চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন দুজন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আরেকজন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন ত্রিশাল উপজেলার আহম্মদাবাদ (সেনবাড়ি) বাজারের দরজি ব্যবসায়ী সোহরাব আলীর সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া ইয়াছিন মিয়া (১৬), সোহরাব আলীর ভাই ফজলু কসাইয়ের ছেলে কোরআনে হাফেজ নূর মোহাম্মদ বাবু (১৯) ও ইসলাম মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া (২৬)।

জানা যায়, ইয়াছিনের মামাতো বোনের বিয়েতে অংশ নিয়ে তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ এলাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। বাড়ি ফেরার পথে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। রিপন মিয়া গরু কেনাবেচার ব্যবসা করতেন।

ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নে স্বজনদের বাড়িতে শোকের মাতম
বাবু ২২ দিন আগে বিয়ে করেছেন। তাঁর সদ্যবিবাহিত স্ত্রী এখন পাগলপ্রায়। রিপন মিয়ার এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর দুই শিশুসন্তানের মধ্যে একটির বয়স দেড় বছর।

বাবুর বাবা ফজলু কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে কোরআনে হাফেজ ছিল। সে ২২ দিন হলো বিয়ে করেছে। আমার বউমার এখন কী হবে। আমার একমাত্র ছেলেকে আল্লাহ নিয়ে নিল। আমরা এখন কাকে নিয়ে থাকব।’

পুলিশ ঘাতক ড্রাম ট্রাকটি আটক করতে পারলেও পালিয়ে গেছে চালক। পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর শম্ভুগঞ্জ চায়না মোড় এলাকায় ময়মনসিংহগামী একটি ড্রাম ট্রাক চলন্ত অবস্থায় একটি মোটরসাইকেলকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা তিনজনের মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। একজনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘বাড়িতে ফেরার পথে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় তিনজন নিহত হয়েছে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে, কিন্তু চালক পালিয়ে গেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category