নিজস্ব প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জে টিকা সংকটে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নবজাতক শিশুরা। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় বিনামূল্যে জন্মের পর দেড়মাস বয়স থেকে শিশুদের বিভিন্ন রোগের প্রতিষেদক টিকা দেওয়া হয়। তবে কিশোরগঞ্জে তিন/চার সপ্তাহ যাবৎ সেই টিকা সংকট দেখা দিয়েছে।
কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর জেলায় নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২ লাখ ৭০ হাজার টিকার চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে জেলা শহরে বসবাসকারীদের সংখ্যা বেশি। সেজন্যই সরবরাহের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকে। তাই প্রতিবছরই টিকার সংকট দেখা দেয়।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের দাবি, চাহিদা অনুযায়ী টিকা সরবরাহ না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে এই কার্যক্রম। খুব শিগগিরিই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার আশা তাদের।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মতে চলতি বছরে ২ লাখ ৭০ হাজার শিশুকে টিকার আওতায় আনা হয়। কিন্তু গত তিন/চার সপ্তাহ যাবত সরকারের দেওয়া আট ধরনের টিকার মধ্যে সংকট রয়েছে শিশুদের (ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস বি, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ পাঁচটি রোগের সমন্বয়ে) পেন্টাভ্যালেন নামক ভ্যাকসিন। যা শিশুদের জীবন রক্ষায় অতি জরুরি। কিন্তু তিন/চার সপ্তাহ যাবত সদর হাসপাতাল, নগর মাতৃসদন, মাতৃসদন সহ কোন টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মিলছে না এই টিকা। এই পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তার পাশাপাশি দুর্ভোগ রয়েছে অভিভাবকদের মাঝে।
২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে দেখা যায়, অনেক মা তার সন্তানকে টিকা দিতে এসে না-পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। পৌর শহরের বত্রিশ এলাকার এক নবজাতকের মা বলেন, আমার সন্তানকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার পর পরবর্তীতে যখন টিকাদান কেন্দ্রে গেলাম তারা বললো টিকা এখনো আসেনি। যখন আসবে তখন দিতে পারবেন। দ্বিতীয় ডোজের সময় পেরিয়ে গেলেও আমার সন্তানকে টিকা দিতে পারছি না।
দায়িত্বরত পৌরসভার টিকাদানকারী মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী টিকা দেওয়া হয়। এখন যেহেতু টিকা নেই তাই আমরা দিতে পারছি না, টিকা আসলে নির্দেশ অনুযায়ী আমরা টিকা প্রদান করবো।
এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডা. অভিজিত শর্ম্মা বলেন, কিশোরগঞ্জের মতো সারাদেশে টিকা সংকট থাকায় তিন/চার সপ্তাহ যাবত টিকা প্রদান কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আর যেহেতু এটি বাহিরের দেশ থেকে আসে সেখানে আমাদের কোন হাত নেই। তবে স্বাস্থ্য বিভাগে এটি সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আমাদের চাহিদার তালিকা পাঠানো হয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে, আশা করছি আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে আমাদের হাতে টিকা পৌঁছাবে। অভিভাবকদের এনিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
Leave a Reply