আজ ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তাড়াইলে অনলাইন জুয়াকে কেন্দ্র করে একজন নিহত

হুমায়ূন রশিদ জুয়েল :  কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলায় অনলাইন জুয়া কে কেন্দ্র করে আল আমিন (২৮) নামে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত আল আমিন তাড়াইল উপজেলাধীন তালজাঙ্গা ইউনিয়নের আউজিয়া গ্রামের দেওয়ান আলীর ছেলে।

এলাকা সূত্রে জানা যায়, ২৬ সেপ্টেম্বর রাত অনুমান ৮ ঘটিকার সময় ক্রিকেট খেলার অনলাইন জুয়া খেলার নিষেধ দিতে গিয়ে জুয়ার এজেন্ট আলাল উদ্দিনের ছেলে শামিমের সাথে নিহত আল আমিনের কথা কাটাকাটি ও এক পর্যায়ে মারামারি হয়। মারামারিতে আল আমিনসহ আরো কয়েকজন গুরুত্বর আহত হলে তাদেরকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাদেরকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নাইমুল ইসলাম নাইম সহ এলাকার কয়েকজন তাদেরকে কিশোরগঞ্জ নেওয়ার পথে উপজেলার তালজাঙ্গা বাজারে শামিম তার জুয়ারো গুন্ডাবাহিনী এরশাদ, ফরিদ, সোহেল, সর্ব পিতা- জসিম উদ্দিন ও বাদল গংদের নিয়ে মব সৃষ্টি করে আহতদের উপর পুনরায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারপিট করে আল আমিনসহ মিজান, পিতা- রতন, আঃ রউফ, পিতা- হাছেন আলী কে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেন । সেনাবাহিনী আহদের পুলিশ হেফাজতে দিলে আল আমিনের অবস্থা আশংকাজনক দেখে তাৎক্ষণিক কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে আল আমিন চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

সরেজমিনে গিযে জানা যায়, আউজিয়া গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে শামিম বহু বছর থেকে অনলাইন ‍জুয়ার এজেন্ট হিসেবে এলাকার যুবক ছেলেদের জুয়ার জগতে আসক্ত করে আসছেন। এক পর্যায়ে শামিম সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে চাকুরী পেয়ে তার জুয়ার এজেন্টটি তারই চাচাতো ভাইকে দিয়ে যান এবং ইহার লাভের ভাগ সে গ্রহণ করে। ঘটনার ৪/৫ দিন পূর্বে শামিম সেনাবাহিনী থেকে ছুটিতে আসেন এবং পূর্বের মতো জুয়ার ব্যবসা দেখাশোনা শুরু করেন। ঘটনার দিন আল আমিন জুয়া খেলার জন্য নিষেধ করলে শামিম ক্ষিপ্ত হয়ে তার অন্যান্য জুয়ারী এজেন্দের সাথে নিয়ে আল আমিনকে মারপিট করে এবং সেখানে আল আমিনসহ আরো কয়েকজন আহত হন। এলাকাবাসী আহদের চিকিৎসার জন্য তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ রেফার্ড করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নাইমুল ইসলাম নাইম বলেন, আমি তাহাদের কিশোরগঞ্জ নিয়ে যাওয়ার সময় শামিম তার দলবল নিয়ে তালজাঙ্গা বাজারে আক্রমন করে। আমি ভয়ে দূরে সরে যাই। শামিম গংরা আল আমিনসহ মিজান ও আঃ রউফকে মেরে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। পরে সেনাবাহিনী তাহাদের তাড়াইল থানায় নিয়ে যায়। তখন আল আমিনের অবস্থা আশংকা জনক দেখে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ নিয়ে গেলে আল আমিন সেখানে মারা যায়।

এ বিষয়ে তাড়াইল থানা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বির রহমান বলেন, শুক্রবার রাতে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের সার্জেন্ট শাখওয়াত আলী নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ১০ সদস্যের একটি দল আল আমিন, পিতা- দেওয়ান আলী, মিজান, পিতা- রতন, আঃ রউফ, পিতা- হাছেন আলী, সর্ব সাং- আউজিয়া-কে থানায় নিয়ে আসেন। এসময় আল আমিনকে গুরুত্বর আহত দেখে কিশোরগঞ্জ চিকিৎসার জন্য সৈয়দ নজরুলে ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। পরে ভোরে খরব পাই আল আমিন মারা গেছেন। আল আমিনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে আছে এবং বাকি দুই জনকে ৫৪ ধারায় কিশোরগঞ্জ জেলা জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রের জন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে থানা এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category