নিজস্ব প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও আওয়ামী লীগ সরকার গঠিত বিতর্কিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত প্রধান সানাউল হকের গ্রেফতার দাবিতে জুতা-ঝাড়ু মিছিলসহ বিক্ষোভ হয়েছে। মিছিল শেষে মুজিবুল হক চুন্নু ও সানাউল হকের কুশপুতুল দাহ করা হয়।
২৮ আগস্ট বুধবার বিকেলে করিমগঞ্জ পৌর বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে করিমগঞ্জ বাজারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মিছিলে হাজার হাজার নারী-পুরুষ হাতে ঝাড়ু ও জুতা নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন।
কর্মসূচিতে অংশ নিতে দুপুর দুইটা থেকে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বাইরের ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে করিমগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে জড়ো হন। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে শুরু হওয়া মিছিল থেকে মুজিবুল হক চুন্নু ও সানাউল হকের গ্রেফতার চেয়ে নানা স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।
মিছিলটি করিমগঞ্জ বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নয়াকান্দি এলাকায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়। পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী আশরাফ হোসেন পাভেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী হারুন সরকারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক ভিপি সাইফুল ইসলাম সুমন, উপজেলা বিএনপি’র সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রুনু, উপজলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, সদস্য সচিব মিহাদুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শিহাব উদ্দিন হানিফ প্রমুখ।
বক্তারা মুজিবুল হক চুন্নুকে
‘স্বৈরাচার’ ও ‘খুনি’ হাসিনার ‘সহযোগী’ হিসেবে উল্লেখ তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান সরকারের প্রতি। এসময় তারা মুজিবুল হক চুন্নুকে করিমগঞ্জ তাড়াইলে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। বক্তারা বলেন ‘চুন্নুকে করিমগঞ্জের মাটিতে পা ফেলতে দেয়া হবে না। তার প্রাণ নাশেরও ব্যাপার ঘটতে পারে। তাই তাকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের হেফাজতে নিতে হবে।’
এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক সানাউল হকের বিচার চেয়েও নেতাকর্মীরা নানান বক্তব্য দেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘মুজিবুল হক চুন্নু ও তার দল স্বৈরাচার ও খুনি হাসিনার সবকটি ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজনে সব সময় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া চুন্নু তার নির্বাচনী এলাকা করিমগঞ্জ ও তাড়াইলে দখলদারিত্ব কায়েমের মাধ্যমে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর দমন-পীড়ন ও নির্যাতন চালিয়ে গেছেন। মুজিবুল হক চুন্নুর ঠাঁই করিমগঞ্জ তাড়াইলে হবে না। তাকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য হন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। এর মধ্যে সর্বশেষ চারটি নির্বাচনে মহাজোট সঙ্গী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কোন প্রার্থী দেয়নি। অপরদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সানাউল হক বিগত ১৫/১৬ বছর যাবৎ ক্ষমতার দাপটে করিমগঞ্জ তাড়াইলের নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করেন। তার বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া গ্রামে।
সাধারণ মানুষ স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার পেছনে মুজিবুল হক চুন্নুর সহযোগিতা ছিল বলে মনে করেন।
Leave a Reply