নিজ্স্ব প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ৯ টি লোহার দানবাক্সে জমা পড়েছে ২৮ বস্তা টাকা। দিনব্যাপী গণনা শেষে পাওয়া যায়
৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।
শনিবার (১৭ আগষ্ট ) সকাল ৮ টায় সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: তরিকুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজুল করীম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এসব দানবাক্স গুলো খোলা হয়। এবার তিন মাস ২৯ দিন পর ৯টি লোহার দানবাক্স থেকে পাওয়া ২৮ বস্তা টাকা গণনা শেষে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।
টাকা ছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ ডায়মন্ড ও স্বর্ণ রূপার বিভিন্ন অলংকার। এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য ফরিয়াদির চিঠি।
দিনব্যাপী উক্ত টাকা গণনায় জামিয়া ইমদাদিয়া ও পাগলা মসজিদ মাদরাসার ২৫৭ জন ছাত্র, স্টাফ ও শিক্ষক ৩৭ জন, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ৭০ ও ১০ জন আনসার সদস্য অংশগ্রহন করেন।
টাকা গণনা কাজে তদারকি করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কাজী মহুয়া মমতাজ এর নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ, মসজিদ কমিটির সদস্যবৃন্দ ছাড়াও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যগণ।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল চার মাস ১০দিনে মসজিদের ৯টি দানবাক্সে ২৭ বস্তায় পাওয়া যায় ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।
কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। আর সে কারণে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষজন এখানে দান করে থাকেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, পাগলা মসজিদের দানবাক্স খালি হওয়ার পর থেকে পরবর্তী খোলার সময় পর্যন্ত ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে নজরদারি করা হয়। এবং ডিভাইসগুলো সবসময় সচল রাখা হয়। পুলিশের টহল টিম কাজ করে। এবং গণনার দিন বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় ব্যাংক পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া সহ নিরাপত্তা জোরদার করা হয় মসজিদের আশেপাশের এলাকা।
মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাগলা মসজিদে দানের টাকার পাশাপাশি গবাদিপশু, হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল দান করা হয়। এবং প্রতিদিন আসরের নামাজের পর দানকৃত এসব পশু নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়ে থাকে। এখানে অনলাইনের মাধ্যমে দান করার কোন ব্যবস্থা নাই। যা দান হয় সরাসরি দান করতে হয়। পাগলা মসজিদের প্রতি মানুষের এমন আবেগ আছে বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ইসলামিক কমপ্লেক্স স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কমপ্লেক্সটি নির্মাণ হলে যেখানে একসাথে ত্রিশ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবে। সকল অর্থ ব্যাংকে জমা থাকে অর্থের লভ্যাংশ এখানকার সাধারণ মানুষের উপকারে ব্যয় করা হয়। মসজিদ নির্মাণের জন্য সকলকে দান করার আহ্বানও জানান তিনি।
Leave a Reply