আজ ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাষ্ট্র সংস্কারে শিক্ষার্থীরা তুলির আচঁড়ে বদলে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জ

শফিক কবীর : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, রাস্তায় ট্রাফিক ব্যবস্থা, বাজার মনিটরিংসহ নতুন এক বাংলাদেশ উপহার দিতে দেশ জুড়ে দেয়ালে দেয়ালে নানা রঙের আলপনা আর দৃষ্টিনন্দন ক্যালিগ্রাফি আঁকছেন। তেমনি বাদ যায়নি কিশোরগঞ্জ জেলা শহর সহ প্রতিটি উপজেলা।

কিশোরগঞ্জ জেলা জুড়ে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে নানা রঙের আলপনা আর দৃষ্টিনন্দন ক্যালিগ্রাফি আঁকছেন শিক্ষার্থীরা।
বিভিন্ন স্থাপনার দেয়ালগুলোতে যেখানে আগে রাজনৈতিক দলের প্রচারণা ও বিভিন্ন পোস্টারে ছেয়ে ছিল, আর এখন সেই দেয়ালগুলোতে শিক্ষার্থীদের রঙ-তুলির আঁচড় পড়েছে। সেগুলো এখন সেজেছে নতুন রূপে। আর এ পরিবর্তনের পেছনে রয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
বিভিন্ন শিক্ষা মূলক ও সচেতনতা বৃদ্ধি সহ ঘটে যাওয়া আন্দোলনের নানান প্রতীকী দিয়ে ‘মহা কালের সাক্ষী হলো বাংলাদেশর নাম যুদ্ধ করে জীবন দিয়ে বিজয় নিয়ে এলাম’ মেধার বিজয় বিকল্প কে? আমি তুমি আমরা’ ‘পানি লাগবে পানি?’ ‘আমাদের দেশের ভাগ্য আমরাই পরিবর্তন করব’ এমন নানান প্রতিবাদী শোভা পাচ্ছে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেয়ালে।

মঙ্গলবার (১৩ আগষ্ট) জেলা শহরের কিশোরগঞ্জ রেল স্টেশন, গুরুদয়াল সরকারি কলেজের মুক্ত মঞ্চ, শিশু পার্ক, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, জেলা উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়ালগুলোতে বিজয় উল্লাসের বিভিন্ন গ্রাফিতি আঁকতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ কালো, সাদা, লাল, নীল, হলুদ-এ যেন রঙের রঙ লাগাচ্ছে, কেউ পানি ছিটাচ্ছে- এ যেন এক মিলন মেলা! প্রতিটি মুখে যেন ফুটে উঠছে এক অনাবিল আনন্দ। সবাই মিলে যেন একটা নতুন স্বপ্নের জন্ম দিচ্ছে। প্রতিটি ক্যালিগ্রাফির আঁচড়ে যেন ফুটে উঠছে এক নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা। এ সময় বিভিন্ন বয়সী ছেলে–মেয়েরা দেয়ালে লিখনে অংশ নেয়।
দেয়াল লিখনে অংশ নেয়া হাছানুর রহমান শান্ত নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের মতো এমন টিমে কাজ করছে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। আমরা গুরুদয়াল কলেজের সামনের দেয়ালসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের পোস্টার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল। এসব পোস্টার, ফেস্টুন অপসারণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সেই সঙ্গে দেয়ালগুলোতে বিভিন্ন চিত্র, উক্তি, ছবি আঁকা হচ্ছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহযোগী ও আর্টিস্ট আশরাফ আলী সোহান বলেন, রেল স্টেশন সহ শহরের দেওয়ালগুলো এতদিন অযত্নে-অবহেলায় পড়ে ছিলো। ছিলো বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগানে পরিপূর্ণ । আমরা নিজেদের অর্থায়নে রংধনুর সাতটি রঙের মাধুরি মিশিয়ে আজ ক্যালিওগ্রাফিতি করে পুরো দেওয়ালগুলো সাজিয়েছি। সর্বস্তরের জনগণ ও পথচারীরা অনেক প্রশংসা করছেন। এখন দেখতেও অনেক সুন্দর লাগছে। এই কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরেছি এজন্য আমি গর্বিত। শহরের প্রতিটি অলিগলি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও আমরা এই কাজগুলো করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category