মোঃ আল আমিন, মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১ তম জন্মদিনে করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোয়া, মিলাদ ও আলোচনা সভার অনুষ্ঠান করেন মাধবদী শহর
আওয়ামী যুবলীগ আজ ৮ আগস্ট রোববার বেলা পৌনে ২ টায় মাধবদী পৌরসভা হল রুমে। ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই মহীয়সী নারী। ১৯৭৫
সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনি শাহাদত বরণ করেন। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৪৫ বছর।
বাল্যকাল থেকে যে মানুষটিকে জীবনসঙ্গী করে আমৃত্যু সাহচর্যে পূর্ণ করেছিলেন তিনি বিদায়ও নিলেন তার সঙ্গেই। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মাধবদী শহর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান
পাশা’র সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক হাজ্বী ইলিয়াসের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী সদর আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সেলিম সিকু, এসময়
অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সহ সভাপতি হাজ্বী জাহাঙ্গীর আলম, আরিফ হোসেন ভিপি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রোকুনুজ্জামান রোকন, আবুল
হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফ, ইয়াকুব ভুইয়া, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আজাদ সহ উপজেলা ও শহর যুবলীগের অন্যান্য নেতা কর্মীবৃন্দরা।
এসময় বক্তারা তাদের বক্তব্যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১ তম জন্মদিনের স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বলেন,
আমৃত্যু মানবিক ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ডাকনাম ছিল রেনু। সারাজীবন চলেছেন সাধাসিধে ভাবে। নিজের চেয়ে পরিবারের কথা ভেবেছেন বেশি। বঙ্গবন্ধুর জীবনসঙ্গী হিসেবে সংগঠনের কথাও ভাবতে হয়েছে তাঁকে। ছোটবেলায় বাবা-মাকে
হারিয়ে স্বজনদের সঙ্গে বেড়ে ওঠেন তিনি। মাত্র ৩ বছর বয়সে বাবা শেখ জহুরুল হক ও ৫ বছর বয়সে মা হোসনে আরা বেগম পৃথিবী
থেকে চিরবিদায় নেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে পড়ার সময় দাদা শেখ কাসেম চাচাতো ভাই শেখ লুৎফর রহমানের ছেলে শেখ মুজিবুর
রহমানের সঙ্গে ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে দেন। বিয়ের পর সামাজিক রীতিনীতির কারণে স্কুলের বদলে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন
তিনি। ছোটবেলা থেকেই গৃহীনি শেখ ফজিলাতুন্নেছা
মুজিব পরিবারের সদস্যদের প্রতি সব সময় দায়িত্বশীল ছিলেন।
জীবদ্দশায় স্বামী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে লড়াই-সংগ্রামের প্রেরণা জুগিয়েছেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ তৎকালীন সব সংগ্রামে তিনি গণমানুষের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সব কষ্ট সহ্য
করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামময় জীবনে তিনি যেমন পরিবারের হাল ধরেছিলেন পরম মমতায়, তেমনি সাংগঠনিক দায়িত্বও পালন করেছেন যথেষ্ট সাহসিকতার সঙ্গে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে
মহীয়সী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব দিকনির্দেশনা দিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীদের সাহস জোগাতেন। কারাবন্দি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ও নির্দেশনা নেতাকর্মীদের জানাতেন। ১৫ আগস্ট
বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েও বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে
হত্যাকারীদের এই জঘন্য কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিপুল বিক্রমে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বঙ্গবন্ধুর সব সাহসী পদযাত্রায় বেগম মুজিব ছিলেন সক্রিয় সহযাত্রী। বাঙালির স্বাধীনতা ও
মুক্তির চূড়ান্ত মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গমাতাই তার জীবনসঙ্গী বঙ্গবন্ধুকে সঠিক পথ বাতলে দিয়েছিলেন। বক্তাদের বক্তব্য শেষে মাধবদী পৌরসভা হলরুমে একঝাক মাদ্রাসা ছাত্র দিয়ে কোরানখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
Leave a Reply