নিজস্ব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জনের অধীনে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগে অনিয়ম, আত্মীয়করণ, দুর্নীতি ও বৈষ্যম্যের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী স্বাস্থ্য সহকারীরা।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবে বৈষ্যম্যের শিকার স্বাস্থ্য সহকারীবৃন্দ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, জেলার তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের বর্মা গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান গত ২০ জানুয়ারি দামিহা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সহকারী পদে যোগদান করে প্রায় তিনমাস যাবৎ নিয়মতান্ত্রীকভাবে নিয়মিত দ্বায়িত্ব পালন করে বেতন ভাতা প্রাপ্ত হয়। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার মামলা বা স্থানীয় অভিযোগ ছাড়াই কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. অভিজিত শর্মার মৌখিক নির্দেশে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অতিশ দাশ রাজিব স্বাস্থ্য সহকারী মো. হাবিবুর রহমানকে দাপ্তরিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখেন। পরে পুনরায় পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে গত ১৯ আগস্ট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্মারক নং- সিএস/কিশোর/প্রশাসন/২০২৫/১৮৮৩৬ মোতাবেক অফিস আদেশে তার নিয়োগপত্র বাতিল করেন। বাতিলের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় ১ং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ২নং ওয়ার্ডে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।
অভিযোগ করা হয়, কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্মারক নং- সিএস/কিশোর/প্রশাসন/২০২৫/২১৫১০, তারিখ ১৭.০৯.২০২৫ইং মোতাবেক তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা খলিলুর রহমানের ছেলে শামীম আহম্মদকে ২নং ওয়ার্ডে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যার রোল নম্বর ২৪৩৮১৪০১৬৫১। সে দামিহা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে আবেদন করে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, চুড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্ত ৫জনের নিয়োগ বাতিল করে অনিয়ম ও আত্তীকরণের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জনের অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট আত্মীয়দের নিয়োগ দেন। তার মধ্যে উল্লেখ করেন, সিএস অফিসে কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. পল্লব দেবনাথের বোন অন্তরা দেবনাথ, পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) বোরহানের ভাগনি সুর্বনা, ভৈরব উপজেলা সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের মেয়ে নূরে জান্নাত মেধা, তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ফজলুর রহমানের ভাগ্নি জামাই শামীম আহমাদ, পাবলিক হেল্থ নার্স নাজমুন নাহারের মেয়ে নীলাকে অনিয়ম ও অনৈতিক মোটা অংকের লেনদের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী পাকুন্দিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারী পপি আক্তার, সদর উপজেলার রশিদাবাদের মো. পাভেল মিয়া, তাড়াইল উপজেলার দিগদাইর ইউনিয়নের রুবেল মিয়া প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. অভিজিত শর্মার কাছে জানতে চাইলে তিনি নিয়োগে কোনো রকম অনিয়ম, অনৈতিক লেনদেন বা বৈষম্য সবকিছুই অস্বীকার করে বলেন, সংক্ষুব্ধরা যেকোনো অভিযোগ করতেই পারে তবে আমরা নিয়মতান্ত্রীকভাবেই নিয়োগ কর্যক্রম সম্পাদন করেছি।
Leave a Reply