নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, আজকে সম্মেলনে প্রার্থীদের মধ্যে কাউন্সিলরবৃন্দরা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি দেশের প্রতিটি মানুষ জাতীয়তাবাদী দলের নিকট তারচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ, সচেতন ও সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল অংশ গ্রহণ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুগ্ম মহাসচিব এমরান সালেহ প্রিন্স, জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ ওয়ারেছ আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ।

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে সুযোগ এসেছে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিএনপি’র আবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার। বিএনপির পক্ষে সবাই দাঁড়ান। অনেকেই বলে, ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল সবাই বলে যারা ১৯৭১ সালে ভিন্ন জায়গায় ছিল তাদের জানা উচিত বিএনপি হচ্ছে ফিনিক্স পাখির মতো বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে বিএনপিকে ধ্বংস করবার, ভেঙ্গে ফেলবার, কিন্তু বিএনপিকে কেউ ভাঙতে পারেনি। যারা অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে, হত্যা-গুম করেছে তারাই পালিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আজকে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে, মিথ্যা অপবাদ ও অপপ্রচার করা হচ্ছে বিএনপি’র বিরুদ্ধে। বিএনপি ৪৭ বছর যা কিছু ভালো সবকিছু দিয়েছে এই বাংলাদেশে। শহীদ জিয়াকে যখন এদেশের শত্রুরা হত্যা করলো তারা ভেবেছিল বাংলাদেশ গেলো বিএনপি গেলো। কিন্তু সেই গণতন্ত্রের পতাকা হাতে তুললেন তার সহর্ধমিনী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি লড়াই করেছেন, রাজপথে সংগ্রাম করেছেন। অনেক নেতারা তার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশকে বদলে দিতে শুরু করলেন।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বিনা বেতনে মেয়েদের পড়াশোনার করার ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে মেয়েদের চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন। এই দল উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। লড়াই করে সংগ্রাম করে এই বাংলাদেশে এসেছে। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান এই দেশে স্বাধীন করেছে। আমাদের গর্ব ১৯৭১ সাল। আমাদের নেতা (জিয়াউর রহমান) গণতন্ত্র দিয়েছেন। আপনারা সেই দলের গর্বিত সদস্য।
দীর্ঘ ৯ বছর পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলন শুরু হয় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে। দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং দলীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে।
সম্মেলনে জেলা বিএনপি’র সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায়  প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও তা নিয়ে ও নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনকে ঘিরে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বর্ণিল সাজে বর্ণাঢ্য  মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা স্টেডিয়ামে সমবেত হন। কয়েক হাজার কর্মীর উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয় সম্মেলন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিকালে ২ হজার ৯০ জন কাউন্সিলর ভোট দিয়ে জেলা বিএনপি’র নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবেন। এই ভোটের মধ্য দিয়েই গঠিত হবে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র নতুন নেতৃত্ব। এতে সভাপতি পদে ২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিনিয়র আইনজীবী মো. মিজানুর রহমান বলেন, স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশন হিসেবে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ থাকবে না। গণতান্ত্রিকভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা করতে হলে দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চাও একান্ত প্রয়োজন।