আজ ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মাধবদীতে সড়কের দু’পাশে ঝোপঝাড় ডাকাত আতঙ্কে যাত্রী ও চালকেরা

আল আমিন, মাধবদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা :

নরসিংদী থেকে মাধবদীর মদনপুর রোডে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ভয়াবহ ঘটনা। সড়কের দু’পাশে ঝোপঝাড় গজিয়ে ওঠায় আতঙ্কে রয়েছেন যাত্রী ও যানবাহন চালকরা। নরসিংদী থেকে মাধবদীর সাবেক মদনগঞ্জ রেল সড়কের নরসিংদী নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে মাধবদী ফায়ার সার্ভিসের মোড় পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই ডাকাতি, ছিনতাই ও দুর্ঘটনার শঙ্কায় এ সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে অসংখ্য যাত্রী ও যানবাহন চালকদের। বিশেষ করে নরসিংদী নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ময়লার ভাগার নামক স্থানের পরে ৫ নম্বর ব্রিজ হয়ে ৬ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত এলাকাটি যেন এখন অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়ে কেবল মাত্র নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা পর্যন্ত। এই পুরো সড়কটিতে ডাকাত দলের দৌরাত্ম্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তারা নরসিংদী জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অহরহ অপরাধ সংঘটিত করে যাচ্ছে। তবুও প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কের দু’পাশে ঝোপঝাড়ের কারণে অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা সহজেই লুকিয়ে থাকার সুযোগ পাচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধার পর থেকে রাতের বেলায় এ সড়ক হয়ে উঠছে ভীতিকর। যাত্রীরা চলছেন ছিনতাইয়ের ভয়ে, আর চালকরা দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে।

চালকরা বলেন, সড়কের টার্নিং পয়েন্টে ঝোপঝাড়ের কারণে একপাশ থেকে অপর পাশ দেখা যায় না। এতে যানবাহন ক্রসিং করতে সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ কারণে সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের কাছে এক আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের মাধবদী শাখার সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, যেখানে ঝোপঝাড় বেশী থাকে সেখানেই অপরাধিরা লুকিয়ে থাকার পথ খুঁজে পায়। রাস্তার পাশে যত্রতত্র ঝোপঝাড় শুধু সৌন্দর্যহানি ঘটাচ্ছে না, বরং অপরাধীদের আড়াল হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে আলো পৌছায় না, সেখানে নিরাপত্তাও হারিয়ে যায়। তার দাবি, দ্রুত সড়কের দু’পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে আলো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।এবিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী সদর উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়নের 8 নং ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হোসেন বলেন, সাবেক মদনগঞ্জ রেল সড়কের দু’পাশের অনেকটা জায়গায়ই বড় বড় ঝোপঝাড় রয়েছে আর সেই সব ঝোপঝাড়ে অনেক সময় বড় বড় দা, ছুরি পাওয়া যায়, এসব স্থানে ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা লুকিয়ে থাকে। সন্ধা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাতে সুযোগ বুঝে তারা ঝোপঝাড় থেকে বেড়িয়ে সড়কে চলাচলরত মোটরসাইকেল, সিএনজি, অটো গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের হাত পা বেঁধে কখনো কখনো ছুরি বা দাঁ দিয়ে মারাত্নক আঘাত করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় ডাকাত দলেরা। পরে অন্য পথচারীরা যাত্রীদের ডাক চিৎকার শুনে এসে উদ্ধার করে যাত্রী ও চালকদের। এছাড়াও এসব ঝোপঝাড় থেকে সন্ধ্যার পর মাঝে মধ্যে শিয়াল বেড়িয়ে মোটরসাইকেলের সামনে পড়ে এতে অনেক সময় মোটর সাইকেল চালক  দূর্ঘটনার শিকার হয়ে বড় সমস্যা পড়ে। এই সমস্যা যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা প্রয়োজন। ইউনিয়ন পরিষদের আগামি মাসিক মিঠিং এ ঝোপঝাড়ের এ বিষয়টি তুলে ধরার চেস্টা করবো। সম্প্রতি এ সড়কের ৫নং ব্রিজের কাছে পর পর কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় যাত্রী ও চালকরা বেশ আতঙ্কে রয়েছেন। সন্ধার পর এসড়কে কোন চালক গাড়িতে যাত্রী নিয়ে যেতে চাচ্ছেন না।

এই সড়কের ডাকাত দলের ডাকাতি, অনিরাপত্তা ও ভয়ভীতি থেকে মুক্তি দিতে প্রশাসন কবে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এমন প্রশ্ন স্থানীয় সাধারণ মানুষের।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category