আজ ২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

করিমগঞ্জে মইছ উদ্দিনের খুনীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ 

নিজস্ব প্রতিবেদক :  কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটনের ব্যবসায়ী মইছ উদ্দিন হত্যাকান্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে এলাবাসী।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কিরাটন গৌরারগোপ নয়াবাজার থেকে পাচঁ থেকে ছয়শতাধিক বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষ মিছিল সহকারে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন। পরে করিমগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে কিরাটন ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন বিএনপির সভপতি সোলেমান সওদাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন জীবন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এরশাদ মিয়া ও নিহতের ভাই ওয়াসিম উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। বক্তাগণ অনতিবিলম্বে ব্যবসায়ী মইছ উদ্দিনের খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

জানা যায়, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে মইছ উদ্দিন (৪৭) কে বাড়ি থেকে মোবাইলে যোগাযোগ করে করিমগঞ্জ কলেজ মোড় আসতে বলে অপহরণকারী চক্র। তারা তাকে সেখানে চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করেন। পরে  অটোরিকশায় গোপন আস্তানায় নিয়ে জিম্মি করে পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তাকে  নির্মম ভাবে হত্যা করেন। পরবর্তীতে মরদেহ  ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন গোপাল কৃষ্ণপুর গ্রামে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ধামরাই থানাপুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নিহত মইছ উদ্দিন  করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন গৌরারগোপ গ্রামের মৃত আব্দুল বারিক মিয়ার ছেলে। তিনি সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকা থেকে শুটকি মাছ এনে কিশোরগঞ্জের বড়বাজার আড়তদারদের কাছে বিক্রি করতেন।

নিহত মইছ উদ্দিনের ছোট ভাই ওয়াসিম উদ্দিন জানান, ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আমার ভাই পরদিন রাতে লাশ হয়ে ফিরেছেন। আমার ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী সহজ সরল সৎ ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি বলেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি  রাত ৯টার দিকে ভাইয়ের মোবাইল ফোন থেকে আমাকে কল করেন অপহরণকারীরা। তারা ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন। পরে  বিষয়টি করিমগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা জেলার ধামরাই গোপাল কৃষ্ণপুর হতে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহে

নিহতের ভাতিজা মোস্তাকিম জানান, আমার চাচার সাথে বেশ কিছুদিন ধরে খাতির জমান অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা জাহেদ। পরে সুযোগ বুঝে অপহরণ করে তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। আমরা খুনী জাহেদ ও তার সহযোগী (ভাগিনা) রুবেল এর ফাঁসি চাই।

করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোরশেদ জানান, ১৭ ফেব্রুয়ারি নিহতের ভাই ওয়াসিম উদ্দিন বাদী হয়ে ৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড,১৮৬০ ধারা অনুযায়ী খুনের মামলা দায়ের করেন। ১ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আমরা মুল অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই ওয়াসিম বিশ্বাস জানান, মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আমরা অপরাধীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হই। গত ১৩ মার্চ কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থেকে রুবেল (৩০) কে রাজধানীর তেজগাঁও থানার নাখালপাড়া  এলাকা থেকে মুল পরিকল্পনাকারী জাহেদ (৪২) কে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করি।
গ্রেফতার জাহেদ আলী একই উপজেলার বারঘরিয়া ইউনিয়নের বারবার্তা গ্রামের মৃত হোসেন আলী ওরফে উছেনের ছেলে। রুবেল জাহেদ আলীর ভাগিনা ও একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

তারা ইতোমধ্যে ১৬৪ ধারায় আদালতে অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্যদের বিষয়েও তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category