আজ ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের থেকে মুক্তি চায় গৌরাঙ্গবাজারের হকাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক : কিশোরগঞ্জ শহরের অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের হাত থেকে মুক্তি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি ও তাদের গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে গৌরাঙ্গবাজার এলাকায় সড়কে ,ভ্যানে ও ব্রীজের হকারেরা।
১২ মার্চ বুধবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন – গৌরাঙ্গবাজার হকার সমিতির মোঃ মোবারক হোসেন সহ অনেকেই।
তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘’সুমন মাহমুদ’’ও তার সহযোগীরা  ছাত্র-জনতার উপর কিশোরগঞ্জ শহরে সশস্ত্র হামলা ও নির্বিচারে গুলি চালায়।
ছাত্র-জনতার সফল বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগের সৈরশাসনের পতন হয়। এ বিপ্লবটি ছিলো তারুণ্যের শক্তিতে উদ্দিপ্ত ব্যাপক জনসম্পৃক্ত অনন্য এক অসাধ্য সাধন।
এদিকে ক্ষমতার পালাবদল হলেও চাঁদা দেওয়ার রেওয়াজ বদল হয়নি । গত ৫ আগস্ট এর পর থেকে কিশোরগঞ্জের গৌরাঙ্গবাজার এলাকায় সড়কে ,ভ্যানে, ব্রীজের হকার (আমরা) ব্যবসা করে জিবীকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু প্রায়ই সুমন মাহমুদ ও তার  সহযোগীরা এসে আমাদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নিচ্ছে।  আগে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রতিটি ভ্যান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা এবং মাসে ৩০০০ টাকা নিতেন। এবং প্রতিটি ভ্যান গাড়ী থেকে এককালীন ২৫০০০ (পঁচিশ হাজার) থেকে ৩০০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা করে নিতেন। এখন বিএনপির কিছু লোক দৈনিক ১০০/১৫০ টাকা চাঁদা নিচ্ছে। এরমধ্যে বিএনপির নাম ব্যবহার করে জেলা শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাদিম মাহমুদ হারুন ও পৌর সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাকারিয়া মাহমুদ ঝুমন এর নির্দেশে গত ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯:০০ ঘটিকার সময় চাঁদা আনতে গেলে ব্যবসায়ী ও ওয়ালীনেওয়াজ খান কলেজের ডিগ্রী প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াদ আহমেদ রাহুল চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় রাহুলের হাতের কবজি কেটে দেয় এবং গত ২৭ ফেব্রুয়ারী দুপুরের সময় গৌরাঙ্গবাজারের হকার ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খলিল এর কাছ থেকে চাঁদা আনতে গেলে খলিল চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় খলিলকে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করে তার হাত-পা ভেঙ্গে নির্জন জায়গায় ফেলে রেখে চলে যায় এই সন্ত্রাসী সুমন মাহমুদ ও তার  সহযোগীরা।
অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সুমন মাহমুদ ও তাদের ভাইদের নামে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা সহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মাদক, ধর্ষণ সহ ৮/১০ টি মামলা রয়েছে। এরপরও সন্ত্রাসী সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে এবং মোবাইল ফোনে আমাদেরকে চাঁদা দেওয়ার জন্য প্রাননাশের হুমকিও দিয়ে আসছে। আমরা তাদের হাত থেকে মুক্তি চাই এবং আমাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের নিকট অবিলম্বে সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
বিক্ষোভ শেষে হারুয়াবাসী ও গৌরাঙ্গ বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হকার সমিতির পক্ষে মোঃ মোবারক হোসেন স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান এর হাতে তুলে দেন তারা।
এসময় গৌরাঙ্গ বাজার ও হারুয়া এলাকার সববয়সী তিনশতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category