এম এ হান্নান পাকুন্দিয়া প্রতিনিধিঃ শীতকে উপক্ষো করেই জমি তৈরি করে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে শুরু করেছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা চাষিরা। কৃষকদের আশা, আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার তারা বাম্পার ফলন পাবেন। গেল বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় উপজেলা প্রত্যন্ত চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ইরি-বোরো ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের।
গ্রামাঞ্চল আবাদী ও অনাবাদী জমিতে ব্যাপকহারে ধান চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। এদিকে স্যালোমেশিন কিংবা পাম্পের সাহায্যে জমিতে পানি দিয়ে ধান রোপণের জন্য জমি উপযোগী করে তুলছেন। অধিকাংশ জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করা ও বীজ তলা থেকে ধানের চারা উত্তোলন করে জমিতে রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তবে দেশে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান আবাদ বাড়ছে বলে জানান স্থানীয় চাষীরা।
পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নুরে আলম জানান, এই চলতি মৌসুমে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরো চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষক। তবে এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রোপন হতে পারে বলেও জানান তিনি।
চলতি মৌসুমে পাকুন্দিয়া বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমি। সোমবার (২০ জানুয়ারী) সকালে উপজেলার পাঠুয়াভাঙ্গা, বুরুদীয়া , এগারো সিন্ধু, হোসেন্দী, চন্ডিপাশা ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ইরি-বোরো রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তবে পাঠুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলিয়া বিশুহাটি গ্রামে, চন্ডিপাশা ইউনিয়নের কোদালিয়া , গ্রামে পুরোদমে ধান রোপণ শুরু হয়েছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবছর জমিতে তারা বিনা সেভেন ৮, হাইব্রিড বিধান -৭ , ২৮, ২৯, ৪৯, ৫২ বায়ার কোম্পানির ধানী গোল্ড, তেজ ও পেট্রোকেম কোম্পানির পাইওনিয়ার এগ্রো-১২ জাতের ধান রোপন করছেন। কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত। বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস, ৫ কেজি জিপসাম এবং ৫ থেকে ৭ ভ্যান গোবর সার মিশিয়ে জমিতে পানি দিয়ে কাদা তৈরি করছেন তারা। পরে বীজতলা থেকে চারা এনে সেই জমিতে রোপণ করছেন। ইতোমধ্যে উপজেলায় প্রায় ২০শতাংশ জমিতে চারা রোপণ হয়েছে। বোরো ধান রোপণের শুরু থেকে কাটা ও মাড়াই পর্যন্ত সময় লাগে ৯০ দিন। কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বোরো চাষিদের খরচ হয় প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। গেলো বোরো মৌসুমে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় এবারও দাম ভালো পাওয়ার আশায় আছেন চাষিরা।
উপজেলার পাঠুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের আমন ধান চাষী খায়রুল ইসলাম মামুন, বিশুহাটি গ্রামের বজলুর রহমান, চন্ডিপাশা গ্রামের আবুল ফজল সহ অনেকেই জানান, ধানের দাম বাজার অধিক থাকায় বোরো রোপণ করছি অধিকাংশ জমিতে। আরো অনেক জমিতে রোপণ করা বাকি আছে। তারা আরো জানান, বাজারের ধানের দাম বেশি। তাই বোরো ধান চাষ বেশি আবাদ করবেন বলে জানান তারা।
Leave a Reply