আজ ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মাধবদীতে হলুদ আভায় ছেয়ে গেছে দিগন্তজোড়া মাঠ

আল আমিন, মাধবদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা:

নরসিংদী জেলার মাধবদীর পুর্বাঞ্চলের ফসলের বিস্তৃত মাঠ জুড়ে সবুজ রঙের গাছ, হলুদ রঙের ফুলের আভা নিয়ে দাড়িয়ে আছে তৃণবৃক্ষ। সরিষা গাছের ফুল হলো সৃষ্টিকর্তার সুন্দরতম সৃষ্টি। যা ফসলের মাঠকে আরো সুন্দর করে তুলেছে। যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়, ভাল লাগার মনকে উতালা করে তুলে মুহূর্তেই। যেন জীবন্ত রূপ পেয়েছে ফসলের ক্ষেত। হেমন্তের বিস্তৃত মাঠজুড়ে সবুজ গাছের বুকে হলুদের পাপড়ি গুলো বাতাসে দুলছে। এযেন দূর থেকে দেখে মনে হয় ‘রূপের রাণী হলুদ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে হলুদ আঁচল বিছিয়ে রেখেছে।’ প্রকৃতিতে হলুদের গালিচা আকৃষ্ট করে স্বজনমন। দলে দলে মৌমাছিরা মধু আহরণে ছুটে আসছে। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হচ্ছে সরিষার হলুদ মাঠ। পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে এমন মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দী করে রাখছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
নরসিংদী জেলা সদরের মাধবদীর পূর্বাঞ্চলে চলতি রবি মৌসুমে বেশিরভাগ জমিতে সরিষার আবাদ করেছে কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে সরিষার গাছ ও ফুল বেশ ভালোই হয়েছে, এতে ফলন বেশ ভালোই হওয়ার আশা কৃষকের। বলা যেতে পারে বাম্পার ফলন হবে। পূর্বাঞ্চলে বিস্তৃর্ণ মাঠের যে দিকেই চোখ যায় এখন শুধুই হলুদের সমারোহ। তবে অনেক কৃষক সরিষা ফুল ও সরিষা শাক বিক্রি করেও নগদ অর্থ করছেন। সরিষা শাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও সুস্বাদু হওয়ায় বেশ কদর রয়েছে। সেই ফুলের ভর্তা ও শাক গ্রামের অনেক কৃষক লোকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
একটি সূত্রে জানা যায়, এই চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকায় কম-বেশী সমান তালেই সরিষার আবাদ হয়ে থাকে। বিশেষ করে জেলার পূর্বাঞ্চলের বেশির ভাগ গৃহস্থ কৃষকরা সরিষার তৈলের রান্না খেয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে প্রায় সহস্রাধীক হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে বলেই জানা যায়। তবে লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও বেশী জমিতে আবাদ করছে। বাজারে বিভিন্ন ব্যান্ডের পাম, সয়াবিন তৈল ভালো স্বাস্থ্যসম্মত না হওয়ায় অপরদিকে সরিষার তৈল স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় অনেকেই সরিষার তৈলের দিকে ঝোঁকার কারণে দিন-দিন সরিষার কদর বাড়ছে। সে কারণে সরিষার আবাদ অনেকাংশে বাড়ছে, এবং সরিষার ফুলের কদর বেশি থাকায অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা আবাদে লাভবান বেশী হচ্ছে কৃষকরা।
জানা গেছে, সরিষার ফুল দিয়ে গৃহিণীরা মজাদার পিঠা ও বড়া, ভর্তা তৈরি করে থাকেন। তাই সরিষা ফুলের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। সদর উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়নের আব্দুল মোমেন, রফিক, জাকারিয়াসহ অনেকেই জানান, তারা এ বছর ৫ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করে ১০ হাজার টাকা খরচ করেছেন, কিন্তু ফুল ও শাক বিক্রি করে খরচের চেয়েও বেশী টাকা লাভ করবেন বলে আশা করছেন। বর্দ্দের কান্দা ও চাঁদের পাড়া গ্রামের অনেক চাষিরা জানান, সরিষা চাষে তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের তুলনায় খরচ কম তবে লাভের পরিমাণ বেশি। তাই এবার অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষার আবাদ করেছেন। এতে ফলনও ভালো হওয়ার আশা করছেন।
#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category