আজ ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাগলা মসজিদের ১০টি দানবাক্সে এবার মিললো ৮ কোটি ২১ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ১০ টি লোহার দানবাক্সে জমা পড়েছে ২৯ বস্তা টাকা। দিনব্যাপী গণনা শেষে পাওয়া যায় ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এসব দানবাক্স গুলো খোলা হয়।
এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর মসজিদের ১০টি দানবাক্সে পাওয়া যায় ২৯ বস্তা টাকা। যা, দিনভর গণনা শেষে দাড়ায় ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা।
টাকা ছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ ডায়মন্ড ও স্বর্ণ রূপার বিভিন্ন অলংকার। এবং রয়েছে অসংখ্য ফরিয়াদির চিঠি।
দিনব্যাপী উক্ত টাকা গণনায় জামিয়া ইমদাদিয়া ১৫৫ জন ও পাগলা মসজিদ মাদরাসার ১৩০ জন ছাত্র, স্টাফ ও শিক্ষক ৩৭ জন, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ৭৫ জন অংশগ্রহন করেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা অতিরিক্ত দায়িত্ব মিজাবে রহমত এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ টাকা গণনার কাজ তদারকি করছেন। সার্বিক নিরাপত্তায় ১০ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ২০ জন পুলিশ, ৫ জন র‍্যাব ও ১৫ জন আনসার রয়েছেন।

এর আগে গত ১৭ আগস্ট মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তায় টাকা পাওয়া গিয়েছিল ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।
পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী বলেন, পাগলা মসজিদের দানবাক্স খালি হওয়ার পর থেকে পরবর্তী খোলার সময় পর্যন্ত পুলিশের টহল টিম কাজ করে। এবং গণনার দিন বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় ব্যাংক পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া সহ নিরাপত্তা জোরদার করা হয় মসজিদের আশেপাশের এলাকা।
মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, দানের টাকার পাশাপাশি গবাদিপশু, হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল দান করা হয়। এবং প্রতিদিন আসরের নামাজের পর দানকৃত এসব পশু নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়ে থাকে।পাগলা মসজিদের প্রতি মানুষের এমন আবেগ আছে বলেই এমন বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, মসজিদটি সম্প্রসারণের জন্য পাশের জমিগুলো ক্রয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাছাড়া জমাকৃত অর্থ দিয়ে প্রায় দেড়’শ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স ভবন স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কমপ্লেক্সটি নির্মাণ হলে যেখানে একসাথে ত্রিশ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবে। সকল অর্থ ব্যাংকে জমা থাকে এবং অর্থের লভ্যাংশ এখানকার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ও উপকারে ব্যয় করা হয়।
কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। আর সে কারণে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সারাদেশের মানুষজন এখানে দান করে থাকেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category