নিজস্ব প্রতিবেদক : কিশোরগঞ্জের ইটনায় ভর্তুকির কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণে অনিয়ম ও লুটপাট শিরোনামে সংবাদ প্রস্তুত করতে ২০২২- ২৩ ও ২৪ সনের তালিকা অনুযায়ী কৃষকের তথ্য সরবরাহ করার জন্য সরাসরি ও মোবাইল ফোনে যেসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়, এরমধ্যে ১৬৩(৫) নং স্মারকে ও ১১/০১/২৩ তারিখে ইস্যুকৃত উপজেলার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলবাক গ্রামের মুকসুদ আলীর পুত্র মো: হাবুল মিয়ার নামে ৭০% ভর্তুকিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন প্রদান করেন উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষকের তথ্যে ৪৮১৩৩২৫৯৬১৪৪২ নং জাতীয় পরিচয় পত্র ও ০১৭৪২৩৮৪৭৪৯ মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করা হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী উক্ত মোবাইল নাম্বারে গত ১৮ অক্টোবর রাত ৮:৩৯ টায় প্রতিবেদকের ০১৩০৩১৯০৯২৯ নাম্বার দিয়ে ৭ মিনিট কথা হয় মহিউদ্দিন নামে একজনের সঙ্গে।
মহিউদ্দিন প্রতিবেদকে বলেন, ইটনার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলবাক গ্রামে আমাদের বাড়ি ছিলো। কিন্তু ১৯৯৬ সনে নদী ভাঙনের ফলে অনেকের মতো আমাদের বাড়িটিও নদীগর্ভে চলে যায়, আমরা হই গৃহহীন।
এরপর আমরা নানার বাড়ি তাড়াইল উপজেলায় গজারিয়া গ্রামে চলে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছি এবং এখানের ঠিকানায় ভোটার হিসেবে আছি। কিন্তু ইটনা উপজেলায় আমার তথ্য ব্যাবহার করে কে বা কারা মেশিন নিয়েছে তা আমি জানিনা। তবে শুনেছি আমার চাচাতো ভাই হাবুল মিয়া একটি মেশিন নিয়েছে। তার এই বক্তব্যসহ তার পারিবারিক আরও কিছু কথোপকথন মোবাইলে রেকর্ড হয়।
মহিউদ্দিনের এমন বক্তব্যে নিউজ প্রকাশ হওয়ায় কৃষি অফিসারের শিখানো মুখস্থ বুলি ও চাচাতো ভাইয়ের চাপে ২০ তারিখ রাত ৯:৫৫ উপরোক্ত নাম্বার থেকে ফোন ব্যাক করে মহিউদ্দিন বলেন – ভাইজান হেইদিন আপনি যে গাড়িটার কথা বলছিলেন আমি বুঝতে পারিনাই, গাড়িটা আমার কাছেই আছে আর আমিই চালাই। আমার চাচাতো ভাই হাবুল তার নাম দিয়ে গাড়িটা এনে আমাকে দেয়। তার কথার জবাবে প্রতিবেদক সরকারি নিয়মটা অবগত করে বলেন, ধরে নিলাম মেশিনটা আপনার কাছে আছে, আর যদি থেকে থাকে তাহলেতো আপনি আরও বড় অপরাধী। একথা শুনে মহিউদ্দিন মুটামুটি ঘাবড়ে গিয়ে আমতা আমতা করে বলেন না মানে ইয়ে, আমি মেশিনটা ওয়াকশানে কিনে এনেছি। এবার প্রতিবেদক ফোন রেকর্ডের কথাটা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি সরাসরি এসে কথা বলবেন বলে ৮ মিনিটের মাথায় ফোন রেখে দেন।
২১ তারিখ বিকেলে আবারও ফোনালাপে মেশিনটা কবে, কত টাকায় নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি এবার দেন অন্য তথ্য, যা সংবাদে প্রকাশ করা যায় না, শুনে আশ্চর্য হয়ে শুধু হাসি পায়।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ইটনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উজ্জ্বল সাহা বলেন – একটা মেশিনের অনেক দাম তাই ২/৩ জন কৃষক মিলেও মেশিন নিয়েছে। কিন্তু স্থায়ীভাবে উপজেলার বাইরে দেওয়া বা যাওয়ার কোন সুযোগ নাই। আমি তালিকা দেখে আগামীকালই তাদেরকে চিঠি পাঠিয়ে ডেকে এনে ব্যাবস্থা নিবো, প্রয়োজনে আমার উর্ধতন কর্মকর্তার সহযোগিতায় যা করার তাই করবো।
ভর্তুকির কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণে অনিয়ম ও তথ্য বিভ্রাটের এখানেই শেষ নয়, ডালমে কুছ কালাহে- পিকচার আবি বাকিহে।
Leave a Reply