আজ ১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নরসুন্দা নদী রক্ষায় বিশিষ্টজনদের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসুন্দা আমার পরিচয়, একে রক্ষায় সোচ্চার হই – শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৪ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা পাবলিক লাইব্রেরির হল রুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও প্রবীন সাংবাদিক মু.আ. লতিফের সভাপতিত্বে, নরসুন্দা নদীর বর্তমান সংকট কাটিয়ে নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে নদীকে রক্ষা করে অতীতের চিরচেনা রুপে ফিরিয়ে আনতে উপস্থিত বিশিষ্টজনদের মধ্যে মত প্রকাশ করেন – কিশোরগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি এম এ রশিদ ভুইয়া, জেলা সিপিবির সাবেক সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ মডেল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ব্রজেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা)’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল, সাংবাদিক শফিক কবীর, খায়রুল ইসলাম, জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সদস্য সামিউল হক মোল্লা, ঈশাখা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বদরুল হুদা সোহেল, সন্দীপন সাহিত্য আড্ডার সভাপতি সাদরুল উলা, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সেলিম, বিশিষ্ট কলামিস্ট গাজী মজিবুর রহমান প্রমূখ।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরকে দ্বিখন্ডিত করে মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা নরসুন্দা নদী এক সময় ছিল প্রবাহমান খরস্রোতা। বর্ষায় এই নদী পথে যাতায়াত করতো বড় বড় পাল তোলা নৌকা। চলাচল করতো যাত্রীবাহী ছোট বড় অনেক নৌকাও। কিন্তু নদীটি দেখলে মনে হয় ছোট্ট একটি খাল, চিরচেনা সেই রুপ এখন আর নেই।
কিশোরগঞ্জবাসীর দীর্ঘ আন্দোলন ও দাবির প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে বিশেষ একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নদীটি খনন করা হয়। প্রশাসনের উদ্যোগে শহর এলাকায় নদীর দুই পাড়ে বহুতল ভবনসহ বহু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর বেদখল হওয়া জায়গাও উদ্ধার করা হয়।
কিন্তু, প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরও নদীর প্রবাহ আর ফিরে আসেনি। কিছুদিন পরই আবারো নদীর পাড়ে কোথাও কোথাও অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। পাশাপাশি শহরের প্রায় সমস্ত বর্জ্য নদীতে ফেলা হয় এই নদীতে। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালের, বাসা বাড়ির অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে পানি দূষিত হয়ে গেছে। ফলে নদীতে কোনো মাছ পাওয়া যায় না। অথচ একসময় যারা এই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো তারা এখন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না।
এই নদীটি ছিল কিশোরগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের প্রবেশদ্বার। এই অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের বড় অবলম্বন ছিল এই নদী। এখন এই দৃশ্য কেবল মধ্য বয়সীদের স্মৃতি। আর নতুন প্রজন্ম নদীর বর্তমান চেহারা দেখে এসব স্মৃতিকথা বিশ্বাসই করতে চায় না।

আমাদের সকলের চাওয়া, নরসুন্দা নদীর উৎপত্তিস্থল ব্রহ্মপুত্র নদের মুখে বেশ কয়েকটি অপরিকল্পিত স্লুইসগেট ও কাওনার বাঁধের কারণে মৃত প্রায় নরসুন্দা  নদীটিকে আবারও তার প্রবাহ ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই, বিগত দিনেও নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে প্রায়ই বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যাক্তির উদ্যোগে শহরে আন্দোলন, মানববন্ধন ও কর্তৃপক্ষ বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। ফলে, কর্তৃপক্ষের আশ্বাস ও ফাইল বন্দী হয় স্মারক লিপি, হয় না কিছুই কাজের কাজ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন – শাজাহান সাজু, শাহজাহান কবির, ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা আশিকুজ্জামান আশিক, সাদেক আহমেদ, শফিকুল ইসলাম উচ্ছ্বাস, এস এম জাহাঙ্গীর আলম, রাশেদ মনির, আজিজুল হক ফাহিম সহ রাজনৈতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিশিষ্টজনেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category