নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি ৩ বছর ৭ মাস ১৩ দিনেও গঠন করা হয়নি, সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান নয়ন।
শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিলুপ্তি ও নতুন কমিটি গঠন করার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান নয়ন।
লিখিত বক্তব্যে নয়ন বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়াদোত্তীর্ণ কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটির মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অভিভাবকহীন কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ, মামা-ভাগ্নে মিলে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থে তাদের চরিত্রের পাশাপাশি সংগঠনের চরিত্রকে নিলামে তুলে দিচ্ছে। এই কমিটি বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠন করার নামে অর্থের বিনিময়ে অছাত্র, বিবাহিত, মাদকাসক্ত এমনকি বিএনপি জামাত শিবিরে জড়িত ব্যাক্তিদের দ্বারা গঠিত কমিটির অনুমোদন দেন।
নয়ন বলেন, ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তৎকালীন সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষরিত তিন সদস্যের একটি কমিটি প্রকাশ করে। ওই কমিটিতে আনোয়ার হোসেন মোল্লাকে সভাপতি, মোহাম্মদ ফয়েজ উমান খানকে সাধারণ সম্পাদক ও লুৎফর রহমান নয়ন (নিজ) সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ওই কমিটি এক বছরের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেখানে নির্দেশনা ছিল এক বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে হবে। বর্তমানে ওই কমিটি ৩ বছর ৭ মাস ১৩ দিনেও গঠন করা হয়নি।
কিন্তু বর্তমান কমিটির এমন কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
নয়ন আরও বলেন, বর্তমান কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ভাই-ভাবী লীগ নিয়ে ব্যস্ত, এখানে সংগঠনের কোনো কার্যক্রম নেই। তাই, আগামী সংসদ নির্বাচনে এই কমিটি দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব না। কারণ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীরা তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানানো হয়েছে। আশা করছি জেলা, উপজেলাসহ প্রতিটি ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।
এব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামি দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে তাড়াইল উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ঈসমাইল সিরাজির ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে, আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ঈসমাইল সিরাজির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের পর ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হয়েছে। স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়টি সত্যতা না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমন ঘটনায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৭ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুনায়েদ, সাবেক পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম স্বপন, সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক কামরুল ইসলাম রতন, সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শাওন আহমেদ নিলয়, সাবেক বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আকাশ খান, সাবেক উপপ্রচার সম্পাদক কাজী আবেদীন সোলেমান, সহসম্পাদক আশিকুর রহমান আশিক উপস্থিত ছিলেন।