নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে জমির সীমানায় গাছ লাগানোকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাই-বোনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আপন চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা।
১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের পূর্ব কুড়িমারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাহমুদুল হাসান আলমগীর (৩০) ও নাদিরা খাতুন (২১) একই এলাকার শামসুল ইসলামের ছেলে।
হামলায় গুরুতর আহত হন শামসুল ইসলামের স্ত্রী আছমা খাতুন (৫০), ছেলে হুমায়ুন কবির (২৮) ও সালমান (২২)।
স্থানীয়রা তাঁদেরকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মমেক) পাঠায়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পূর্ব কুড়িমারা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর দুই ছেলে শামসুল ইসলাম ও আব্দুল কাদিরের মধ্যে কিছুদিন ধরে জমির সীমানায় গাছ লাগানোকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছিল। আলমগীর এমবিএ পাস করে সিলেট শহর ব্যবসা করতেন। গত বুধবার রাতে আলমগীর সিলেট থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। আজ সকালে আলমগীর জমির সীমানায় গাছ লাগাতে যান। এ সময় আলমগীরের চাচা আব্দুল কাদির ও তাঁর চাচাতো ভাই আরমান, ইমরান ও এমরানসহ সবাই দা ও কুড়াল নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় আলমগীরের মা, ভাই ও বোন ধরতে এলে তাঁদের ওপরও হামলা চালায় তারা।
কুড়ালের কোপে ও চুরির আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আলমগীর। আলমগীরের বাবা শামসুল ইসলাম তাঁর মেয়েকে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় আরমান দা দিয়ে কোপ দেন। পরে শামসুল ইসলামের স্ত্রী আছমা খাতুন, মেয়ে নাদিরা, ছেলে হুমায়ুন কবির ও সালমানকে মমেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। মমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিরা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
হোসেনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান টিটু (ওসি) আরও জানান,
মরদেহ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নিহত আলমগীরের স্ত্রী ফাহিমা সুলতানা নীলা বলেন, ঘাতকেরা চোখের সামনে আমার স্বামীকে খুন করেছে। আমার দেড় বছরের ছেলে আয়ানকে নিয়ে কীভাবে বাঁচব। আমি আমার স্বামী ও ননদীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
নিহত আলমগীর ও নাদিরার বাবা শামসুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়েটা কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজে স্নাতকে লেখাপড়া করতেছে, ছেলেটা এমবিএ পাস করে সিলেট শহরে ব্যবসা করে। একসঙ্গে আমার দুটি সন্তানকে হত্যা করেছে ভাই আব্দুল কাদির ও তাঁর ছেলেরা। খুনিরা পরিকল্পিতভাবে আমার সাজানো সংসার ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ঘটনার পর কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
Leave a Reply