নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ কিশোরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর শিশু হত্যা ও শিশু নির্যাতনের দুটি ঘটনার ৩ আসামি গ্রেফতার, সংবাদ সম্মেলনে জানালেন পুলিশ সুপার।
বুধবার (৩১ মে) সকালে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের ঘটনার বর্ণনা দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ (পিপিএম বার)।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ১৯ মে সন্ধ্যার পর নিকলী উপজেলার কুর্শা মাইজপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে, কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের প্লে শ্রেণীর ছাত্র লাবিব (রাবিব) নিখোঁজ হয়। পরদিন দুপুরে স্থানীয় তুহিনের পতিত ঘড়ের পিছনে একচালা ঘরের চৌকির নিচে লতাপাতা ও আসবাবপত্রে ঢাকা ( প্রায় সাড়ে ৫ বছর বয়সের) রাবিব এর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
ওইদিন আমির হোসেন নিকলী থানায় একটি অজ্ঞাতনামা হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিকলী থানা পুলিশ, নিকলী সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। ৩০ মে রাত সাড়ে নয়টায় নিকলী উপজেলার রসুলপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে, ছাতিরচর দক্ষিণপাড়ার মোঃ তৈয়ব আলী (বাছির)’র ছেলে মোঃ দিদারুল ইসলাম পায়েল(৩৩) ও কুর্শা মাইজহাটি গ্রামের জমশেদ খাঁন’র ছেলে আব্দুল কাইয়ুম (তনয় খাঁন) কে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আাসামি তনয় আরও স্বীকার করে, পারিবারিক শত্রুতা ও বিভিন্ন দ্বন্দ্বের জেরে বাদীর ছেলেকে একটি মসজিদের সামনে থেকে খাবার ও খেলনা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে পুকুরের পাশের জমিতে মুখে গামছা পেঁচিয়ে নিয়ে যায় এবং ঘাড় মটকে ও নাকেমুখে মাটি দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এসময় অপর আসামি দিদারুল ইসলাম পায়েল পাট ক্ষেতে লুকিয়ে ছিল বলেও জানায়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গত ১৭ এপ্রিল কটিয়াদি উপজেলার বাগরাইট গ্রামের মৃত নাজিমুদ্দিনের ছেলে ইকবাল তার পাঁচ বছর বয়েসী মেয়েকে নির্মমভাবে মারপিট করে, এবং এসময় ভিডিও ধারন করে শিশুটির সৎমা মোছাঃ রাবেয়া আক্তার।
শিশুটি নির্যাতনকারি ইকবাল হোসেনের প্রবাসী প্রথম স্ত্রীর সন্তান। গত দুইদিন ধরে নির্যাতনের এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে, বাবা গা ঢাকা দেন। বিষয়টি পুলিশেরও নজরে আসে। উক্ত ঘটনায় আজ সকালে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান মিঠু বাদি হয়ে কটিয়াদি থানায় শিশু নির্যাতন আইনে ২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করলে সাথে সাথেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাষণ্ড বাবা ইকবালকে গ্রেফতার করে আজ দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে।
এঘটনার সাথে জড়িত সৎমাকেও গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। শিশুটি বর্তমানে পুলিশের তত্ত্বাবধানে তার দাদীর নিকট আছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply