আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কিশোরগঞ্জে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন বিক্ষোভে পরিনত

নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ কিশোরগঞ্জে জেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি রুপ নেয় বিক্ষোভে।

৭ নভেম্বর সোমবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উপলক্ষে শহরের স্টেশনরোডস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পু‌লি‌শের লা‌ঠিচার্জ, গুলি   ও হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ১০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে এগারোটায় জেলা বিএনপির স্টেশনরোডস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচির কথা থাকলেও তা বিশাল বিক্ষোভে পরিণত হয়। এতেকরে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো শহর।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের দাবি গত ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনে নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থায় জড়ো হয়,বেলা ১২ টার পর থেকে স্থানীয় অন্যান্য নেতাকর্মীরা মি‌ছিল নি‌য়ে যোগদান করা‌র সময় পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পু‌লি‌শ তাদের উপর লা‌ঠিচার্জ ও গুলি করে। গু‌লি‌তে জেলা যুবদলের সভাপ‌তি খসরুজ্জামান শরীফসহ অন্তত আরো ১৮ জন নেতাকর্মী আহত হয় এবং উল্টো ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে করা হয় বাড়ি ছাড়া। আহতদের মধ্যে দুজন নেতা আজ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। একজন পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে কিভাবে গুলিবর্ষণ করে তা আপনাদের প্রচারের মাধ্যমে দেশবাসী জানতে চায়।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন,বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেছ আলী মামুন।
সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ৭ নভেম্বর দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সারাদেশের কোথাও পুলিশের কোন ন্যাক্কারজনক হামলা আমরা দেখতে পাইনি। কিন্তু কিশোরগঞ্জে সেদিন কী এমন অবস্থার সৃষ্টি হলো যে, পুলিশ নির্বিচারে যুবদলের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করলো? তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর দেখেছি, সেদিন এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বা আমাদের নেতাকর্মীরা এমন কোনো উশৃংখল আচরণ করেনি, যে কারণে পুলিশকে সেখানে গুলি করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বলতে চাই, প্রশাসন হচ্ছে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের টাকায় যাদের বেতন হয়, জনগণের টাকায় যেই গুলি কেনা হয়, সেই গুলি কেনো আজকে জনগণের বুকে করা হচ্ছে? আজকে কথায় কথায় তারা গুলি করা যেন আভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম (সিআইপি)’র সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, এডভোকেট জালাল উদ্দিন, এডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন, এডভোকেট শরীফুল ইসলাম শরীফ, এডভোকেট মুনজুরুল ইসলাম জুয়েল সহ জেলা বিএনপি’র বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষ হতে না হতেই শত শত বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আটকদের মুক্তি দাবিতে ভিক্ষুক করতে থাকে। বিক্ষুব দমন ও তাদের থামাতে ব্যর্থ হয় নেতৃবৃন্দ। এতেকরে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো শহর।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, গত সোমবার বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে মিছিল করছিলেন। তাদের রাস্তা ছাড়তে বলায় মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এক পর্যায়ে কার্যালয়ের ভেতর থেকেও চেয়ার ছুড়ে মারেন তারা। এসময় আমি নিজেসহ পুলিশের ১০ জন সদস্য আহত হয়। পরে মৃদু লাঠিচার্জ ও শটগানের কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।  ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির দুইজনকে আটক করে রাতে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করে আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বাকিদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আজও তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এই ধারণায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ আমরা সর্বোচ্চ সর্তকতা অবস্থানে থেকে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই  তাদের মোকাবিলা করে জনগণের রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে দেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category