মোঃ আল আমিন, মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
মাধবদী শহর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সকল প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে সম্মেলনকে স্থগিত করা হয়েছে। মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম যুগ্ন আহ্বায় পবিত্র রঞ্জন দাস এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাদের ফেসবুক আইডিতে। গত বৃহস্পতিবার ২৮ জুলাই মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম ও যুগ্ন আহ্বায়ক পবিত্র রঞ্জন দাস এক বিবৃতিতে এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। পরবর্তীতে তারিখ জানানো হবে। সম্মেলন স্থগিত না হলে রাত পোহালেই ২৯ জুলাই (শুক্রবার) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মাধবদী পৌর শহর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে চা স্টল, এমনকি দোকানপাটের আড্ডায়ও চলছিলো এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্ট, সম্মেলনস্থল ও এর আশেপাশে পদ প্রত্যাশীদের ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও তোড়নে ছেঁয়ে গেছে। ঝাকজমক পুর্ণ অনুষ্ঠান করার লক্ষে মঞ্চসজ্জার কাজও ছিলো পরিপুর্ণ। কোরবানির ঈদের পরবর্তী মুহূর্তে আরেকটি উৎসব যেন কড়া নাড়ছিলো আওয়ামী কর্মী-সমর্থকদের মাঝে।
হঠাৎ করে শেষ মুহূর্তের এমন খবরে হতাশ হয়েছে মাধবদী পৌর শহর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়েও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পদপ্রত্যাশী নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে শেষ সময়ে এসে সম্মেলন স্থগিত হওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। আমরা চাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে আবার তারিখ ঘোষণা করে সম্মেলন হোক। তবে এক্ষেত্রে কয়েকজন মনে করছেন, স্থানীয় জেলা আওয়ামী লীগের কিছু স্বার্থন্বেষী লোকের সমন্বয়হীনতার কারণে একেবারে শেষ সময়ে এসে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেটা মোটেও কাম্য নয়। অনেকেই মনে করছেন, সম্মেলন যে কারণেই স্থগিত করা হোক না কেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সফল সম্মেলন করে কমিটি করে দিলেই আবারও প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে মাধবদী শহর আওয়ামী লীগ।
এদিকে শুক্রবার নির্ধারিত সময়ে সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন মাধবদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন আহমেদ, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আলহাজ্ব আলী হোসেন শিশির (সিআইপি), মাধবদী শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাকির হোসেন, ভিপি হাফিজুর রহমান, মাধবদী শহর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান পাশা, সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ ইলিয়াস, কৃষক লীগের খায়রুল ইসলাম খান সহ মাধবদী শহর আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। সম্মেলন উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরাও সম্মেলন মাঠে উপস্থিত হয়ে জানতে পারেন সম্মেলন হবে না তখন তারা খুবই মর্মাহত হয়। সম্মেলন মাঠে উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের উদ্দ্যেশ্যে মাধবদী শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক মাধবদী শহর আওয়ামীলীগের সম্মেলন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম (এম.পি), জেলা আওয়ামী লীগ, থানা আওয়ামী লীগ সকলের সাথে যোগাযোগ করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। সম্মেলনে কাউন্সিলর, ডেলিকেটেড ও ব্যালট পেপার এর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিলো। শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমরা আমাদের সম্মেলনের স্থগিতের কোন চিঠি বা নোটিশ মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের নিকট থেকে পাইনি। তাহলে তারা কিসের মাধ্যমে কার ইন্ধনে, কোন স্বার্থে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলনকে মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের কমিটির আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক সম্মেলনে উপস্থিত না হয়ে সম্মেলনকে স্থগিত করলো তা এখন নেতা কর্মীদের জানতে চাওয়া এক প্রশ্ন। শেষ মুহূর্তে সম্মেলন কেন স্থগিত করা হলো এবং কত দিনের মধ্যে সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা হতে পারে এমন প্রশ্নে, মাধবদী থানা আ’লীগের আহ্বায়ক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন অনিবার্য কারণবশতই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের পরপরই যে কোনদিন সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
Leave a Reply